আমিরুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: আসন্ন ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী অংশগ্রহণ না করায় উত্তরাঞ্চলের প্রবেশদ্বার সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের কামারখন্দ অংশের জমে ওঠেনি নির্বাচনি প্রচারণা। নৌকা প্রতীকের সমর্থক ছাড়া প্রচার প্রচারণায় আগ্রহ কম অন্য প্রার্থীদের।
সিরাজগঞ্জ-২ আসন সদর ও কামারখন্দ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এরমধ্যে কামারখন্দ উপজেলায় বিভিন্ন রাস্তায় সাঁটানো সকল প্রার্থীর পোস্টার থাকলেও বেশীরভাগ পোস্টার নৌকা প্রতীকের। নৌকার পক্ষেই শুধু গণসংযোগ ও উঠান-বৈঠকসহ প্রচার প্রচারণা জমিয়ে তুলেছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা । তবে এক্ষেত্রে জাতীয় পার্টি ও জাসদের প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণা ও তাদের অনুসারীদের তেমন কোনো নির্বাচনী তৎপরতা চোখে পড়েনি।
সম্প্রতি কামারখন্দ উপজেলার অংশের জামতৈল, ঝাঐল ও রায়দৌলতপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোথাও কোনো নৌকা প্রতীকের প্রচারণা ছাড়া অন্য কোনো প্রার্থীর প্রচারণা দেখা যায়নি। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যেও আগ্রহ অনাগ্রহ দেখা গেছে। ভোটে নৌকার প্রার্থীর জন্য অনেকটা খালি মাঠের মতো রয়েছে। এবারের নির্বাচনে বিএনপিসহ শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী অংশ না নেওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন অনেক ভোটাররা।
সিরাজগঞ্জ-২ আসনে নৌকা প্রতীকের ড. জান্নাত আরা হেনরী ছাড়াও আরও রয়েছেন জাতীয় পার্টির মোঃ আমিনুল ইসলাম ঝন্টু ও তৃণমূল বিএনপির মোঃ সোহেল রানা, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সাদাকাত হোসেন খান বাবলু ও জাকের পার্টির মোঃ আব্দুর রুবেল সরকার।
ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের বাইরে এই আসনে শক্ত অবস্থান রয়েছে বিএনপির। এবার বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা-পূর্ণ নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন তারা। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ কম থাকায় তাদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়াও কঠিন হবে বলে সন্দেহ অনেক ভোটারের।
পয়তাল্লিশোর্ধধ অটোভ্যান চালক মোসলেম উদ্দিন বলেন, কে ভোটে এলো আর না এলো এটা দেখে আমি কি করবো। বাজারের জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে বউ পোলাপান নিয়ে কিভাবে খেয়ে বাঁচব সে চিন্তায় আছি।
পঞ্চাশোর্ধ্ব রিকশাচালক হোসেন আলী বলেন, একটা সময় ভোট এলে কত আনন্দ হতো। মিটিং-মিছিলে যেতাম, আর এখন ভোটের আনন্দ-উৎসবে ভাটা পড়েছে। আগেরকার সেই ভোটের আমেজ এখন নেই বললেই চলে।
এ বিষয়ে নৌকার সমর্থক উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোঃ সেলিম রেজা বলেন, নির্বাচন নিয়ে সাধারণ ভোটাররা খুবই খুশি। আমরা প্রতিদিনই আমাদের যে ওয়ার্ড কমিটি এবং উপজেলা নির্বাচনী কমিটি রয়েছেন তারা প্রতিটা গ্রামের বাড়িতে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চাইছেন এবং আমাদের জন্য মনোনীত প্রার্থী তিনিও প্রতিনিয়ত গণসংযোগ এবং ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চেয়ে চলেছেন। ভোটারদেরকে কেন্দ্রে আনার জন্য নানা মুখী উদ্যোগের পাশাপাশি অসহায় প্রতিবন্ধী এবং যারা চলতে পারেনা তাদেরকেও ভোট কেন্দ্রে আনার জন্য পরিবহনের ব্যবস্থা থাকবে।
৬৩ সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ)আসনের কামারখন্দ অংশের ৪টি ইউনিয়নের ৪৮টি কেন্দ্রের মোট ভোটার ১ লাখ ১৯ হাজার ১৩৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬০ হাজার ৩৭৫ জন। নারী ভোটার ৫৮ হাজার ৭৫৯ জন।
নির্বাচন নিয়ে কামারখন্দের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহীন সুলতানা বলেন, নির্বাচন নিয়ে এখন পর্যন্ত পরিবেশ ভালো আমরা সুন্দরভাবে নির্বাচন শেষ করতে পারবো আশা করছি। বিগত নির্বাচনে যে কেন্দ্রগুলো ঝুঁকিতে ছিল এবার সেগুলোতে আমাদের বেশি নজর থাকবে। নির্বাচনী মাঠে ইতিমধ্যে কামারখন্দ উপজেলায় বিজিবি এবং আর্মি চলে এসেছে। আমরা আশাবাদী সবাইকে নিয়ে একটি সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে পারবো।
ছবির ক্যাপশন: কামারখন্দ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নির্বাচনের প্রচার প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ড: জান্নাত আরা হেনরী।